ছৈয়দুল আমিন চৌধুরী, টেকনাফ:
বিজিবি’র হেফাজতে থাকা মিয়ানমার দু’নাগরিককে সেই দেশের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ।১১ অক্টোবর দুপুরে টেকনাফ বন্দরে জেটি সংলগ্ন নাফ নদীর শূন্য রেখায় এদের ফেরত দেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ২ বিজিবি ব্যাটলিয়ান অধিনায়ক লে.কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ। তিনি জানিয়েছেন, গত রবিবার ভোরে মিয়ানমারের বিজিপি’র তিনটি ঘাটিঁতে হামলা, হতাহত ও অস্ত্র লুটের ঘটনার পর নাফ নদী পেরিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে টেকনাফের হ্নীলা আনোয়ার প্রজেক্ট পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ কালে দু’জন মিয়ানমার নাগরিককে আটক করে বিজিবি জওয়ানরা । ধৃতরা সাধারন কৃষক বলেও জানান তিনি।
আটককৃতরা হচ্ছে মিয়ানমারের মংডু থানার নাগাকুড়া (নাকপোড়া) এলাকার বশির আহমদের ছেলে নুর কামাল ওরফে আনোয়ার কামাল ও নরুল ইসলামের ছেলে মোঃ ইউসুফ।
পরে বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও বিজিবি কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ হয়। এর সুত্র ধরে ৮ সদস্যোর মিয়ানমার ইমিগ্রেশন কতৃপক্ষের নেতৃত্ব দেন মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের মংডুস্থ ৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্যাটলিয়ান কমান্ডার অ থ জ্য । প্রতিনিধি দল ইঞ্জিন চালিত বোট যোগে টেকনাফ স্থল বন্দর সংলগ্ন জেটি বরাবর পৌঁছে দুপুর সাড়ে ১২ টার সময়। টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটলিয়ান কমান্ডার লে কর্নেল আবুজার আল জাহিদের নেতৃত্বে বিজিবি প্রতিনিধি দল একটি স্পীড বোট যোগে নাফ নদীর শূন্য রেখায় গিয়ে বিজিবি হেফাজতে থাকা এ দু’ মিয়ানমার নাগরিককে হস্তান্তর করে।
খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যার দিকে হ্নীলা নাফ নদী সংলগ্ন আনোয়ার প্রজেক্ট এলাকা হতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা কালে গুলিবিদ্ধ নুর কামাল ও মোঃ ইউসুফকে আটক করে বিজিবি। এরপর থেকে আটক এ দু’ রোহিঙ্গা মিয়ানমার নাগরিকের ব্যাপারে গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেনি বিজিবি। আটক নুর কামাল টেকনাফ হ্নীলা চৌধুরী পাড়া সংলগ্ন নাফনদীর ওপারে মিয়ানমান বৌদ্ধ সম্প্রদায় অধ্যুষিত হাইমপ্রাং এলাকার যাত্রী পাচার কাজ করতো । মিয়ানমারের ওই এলাকার অবৈধ ঘাটের ইজারাদার অংচেং। অংচেং ’র সহকারী হিসেবে নূর কামাল ও নাইড গার্ড হিসেবে মোঃ ইউসুফ কাজ করে। ঘটনার দিন সকালে এরা দু’জন পাশ্ববর্তী বিজিপি ক্যাম্পে যায়। এ সময় বিজিপি সদস্যরা অতর্কিত গুলি বর্ষন করে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় নুর কামাল এবং সামান্য আহত হয় মোঃ ইউসুফও । আহত নুর কামাল ও ইউসুফ চিকিৎসার জন্য নাফনদী পেরিয়ে টেকনাফ সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা কালে বিজিবি সদস্যদের হাতে ধরা পড়ে।
এদিকে মিয়ানমারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা পল্লীতে সেনা বাহিনী অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলমান রেখেছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে। এ ধরনের অভিযান চালাতে গিয়ে মংডু থানার উত্তর অংশের বলি বাজার এলাকায় সেনা বাহিনীর গাড়ী বহরে হামলা ও হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। সেখানে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
অপর দিকে গত সোমবার সন্ধ্যায় মিয়ানমারের মংডু শহরে আটকা পড়া ২০ জন বাংলাদেশী নাগরিক ফেরত আসে। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত মিয়নমারের দু’ শতাধিক নাগরিক বাংলাদেশে আটকা পড়েছে। টেকনাফ বন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগের দায়িত্বরত ডাটা এ্যান্ট্রি অপারেটর মোঃ আনোয়ার জানান, দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়ার কারনে মঙ্গলবার মিয়ানমার নাগরিকদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। বৈরী আবহাওয়া না থাকলে বুধবার সকালে আটকা পড়া মিয়ানমার নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর কথা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
পাঠকের মতামত